ন্যাশনাল হ্যাকাথন ২০১৬- নুবদের সেকেন্ড রানার্সআপ হবার অভিজ্ঞতা
আইসিটি মন্ত্রনালয় এর আয়োজিত ন্যাশনাল হ্যাকাথন ২০১৬ ছিলো আমার এটেন্ড করা প্রথম হ্যাকাথন। এর আগেই কখনো হ্যাকাথনে যাওয়া হয়নি, আমরা মাত্র ফার্স্ট ইয়ারের থার্ড সেমেস্টারে। শুধুই অভিজ্ঞতা অর্জন, ফ্রি ফুড এবং মজা করার ইচ্ছা নিয়েই ছয়জন নুব বন্ধু মিলে একটা টিম করে রেজিস্ট্রেশান করে ফেলি। আর কিছু না হোক, ফ্রিতে ফুডতো পাওয়া যাবে! হ্যাকাথনে কিভাবে কি হলো, সেকেন্ড রানার্স আপ কিভাবে হলাম এসব অভিজ্ঞতা বর্ননা করেই এই ব্লগ পোস্ট। পদার্থ বিজ্ঞানে ইলেক্ট্রনের গতি ও অবস্থানের রহস্যময় অনিশ্চিত আচরনের “আনসার্টেইনিটি প্রিনসিপাল” এর আবিস্কারক হলেন বিজ্ঞানী হাইজেন-বার্গ। আর কম্পিউটার প্রোগ্রামের রহস্যময়ী অনিশ্চিত আচরন করা বাগ’গুলোকে তারই স্মরনে প্রোগ্রামাররা নাম দিয়েছেন হাইজেন-বাগ। একটা “হাইজেনবাগ”কে যখন বোঝার বা সমাধান করার চেস্টা করা হয় তখন হয় সেটা গায়েব হয়ে যায় নাহয় আরো উদ্ভট নতুন রুপ নিয়ে প্রোগ্রামারের ঘুমের তেরটা বাজিয়ে দেয়। আমাদের এবং আমাদের লিখা কোডের সাথে তাই মিল করেই টিমের নাম রাখি “দ্যা হাইজেনবাগস” (The Heisenbugs) আমি লিডার হবার প্রেশার নিতে চাইনি একদমই কিন্তু এরপরেও টিমের লিডার নির্বাচন করা হয় আমাকে। রেজিস্ট্রেশানে আমরা বেছে নিয়েছিলাম “সাস্টেইনেবল টুরিজম” প্রবলেম সেটটি। তো আমরা হ্যাকাথনের আগেই এদিক সেদিক বিভিন্ন আইডিয়া নিয়ে ভাবতে থাকি। আমরা প্রথমেই যেটা বুঝতে পারি যে আমরা কেউই আসলে সি,সি++ এর বাইরে তেমন কিছু পারিনা। টিমের দুইজন খুবই বেসিক পিএইচপি, কোডইগনাইটার পারে, আর বাকিরা কয়েকজন বেসিক এইচটিএমএল, সিএসেস, জাভাস্ক্রিপ্ট, বুটস্ট্রাপ এসব পারি। অন্যরা তাও পারিনা। এসব কারনেই আমরা নলেজ বাড়ানোর চেস্টা করতে থাকি আর এক পর্যায়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে আমাদের পক্ষে নেটিভ মোবাইল অ্যাাপ করা সম্ভব না, আমরা একটা ওয়েব এপ্লিকেশান করারই চেস্টা করবো। আমাদের প্লান ছিলো সেখানে বাংলাদেশের সব টুরিস্ট স্পটের একটা সুন্দর ডাটাবেস থাকবে, নেভিগেশান, রেটিংস, ইন্টেলিজেন্ট সার্চ সিস্টেম, প্লেস সাজেস্ট সিস্টেম, গাইড রেজিস্ট্রেশান, ইভেন্ট, কালচারাল ক্যালেন্ডার ইত্যাদি ইত্যাদি বিভিন্ন ফিচার সহ। এসব ফিচারের অধিকাংশই কিভাবে ইমপ্লেমেন্ট করতে হয় তার বেসিক ধারনাটাও আমাদের ছিলোনা। ইভেন্টের কয়েকদিন আগে আমরা এই উদ্দেশ্যে ডাটা কালেকশন ও করে রাখি প্রায় একশটার মত স্থানের। এরপর যা হবে হবার, ফ্রি ফুড, ফ্রি টিশার্ট আর কি লাগে ভেবে রওনা দিলাম হ্যাকাথনে। আমাদেরকে বার বার ফোন করে বলে দেয়া হয়েছিলো যাতে আমরা ৮টার আগে উপস্থিত থাকি। আমরা মিরপুর ১৪, পুলিশ কনভেনশন সেন্টারে গিয়ে পৌছাই সাড়ে সাতটার দিকে। সেখানে গিয়েই দেখি প্রচুর মানুষ অলরেডী সেখানে হাজির, একেকটা টিমকে দেখেই আমাদের গলা শুকিয়ে যাচ্ছিলো। যাকেই দেখি মনে হয় যেন এ তো সেই লেভেলের কোডার, আমরা এ কই আসলাম, আমাদেরকে “কিছু পারেন না”, “আপনারা আসতে পারেন” এমন কিছু বলে ভাগিয়ে দিবে নাতো?