এই পোস্টের “সংক্ষেপ” পড়তে ক্লিক করুন এখানে

হয়তো আমি মাতৃভাষা দিবস নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেইনি, হয়তো আমি এতই অলস যে ছুটির দিনে ভোরবেলা খালি পায়ে গিয়ে ফুল দেইনা,এর মানে এই না যে মাতৃভাষা বাংলার প্রতি, শহীদদের প্রতি, দিনের অর্থটার প্রতি আমার কোন শ্রদ্ধা নেই। 

আমি মনে করি এই ব্যাপারগুলোর বহিঃ প্রকাশ সম্পুর্নভাবে ব্যাক্তি নির্ভর। তাই আমি কোন কোন জাতীয় দিবসে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেইনি বা প্রোফাইল পিক বদলাইনি সেটা নিয়ে অন্য কোন বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে এড হমিনেম অস্ত্র হিসেবে ব্যাবহার করাটা আমার কাছে মোটেও দেশপ্রেম ঠেকে না। 

কোন এমন আইনের বই নেই যে সেখানে লিখা আছে খালি পায়ে ফুল দিলেই শ্রদ্ধা হবে, বা ফেসবুকে স্ট্যাটাস রচনা করতেই হবে, ইত্যাদি। কে কিভাবে পালন করবে সেটা নিয়ে অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করাটা আমার কাছে অদ্ভুত লাগে। 

ব্রাউজার সার্ভাইভাল স্ট্রাটেজি নিশেতে নামকরা গেম ছিল “ক্যারাভানিয়ার ২“। গেমটি সারা বিশ্বের মানুষ শুধু কনগ্রিগেটেই খেলেছে প্রায় সাত লক্ষ বার। অন্য সকল সোর্স মিলিয়ে সংখ্যাটা দশ লাখ+। আমার কন্ট্রিবিউশনের জন্য আমাকে কিছু ক্রিয়েটিভ ফ্রিডম দেয়া হয়েছিল, সেই গেমে একটি পুরো শহরের নাম আমি রেখেছিলাম “স্বাধীন-৭১”।  

বাংলা লেখার রিদমিক কিবোর্ড যখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে, তখন সবাই সেই কিবোর্ডের সুন্দর কোন থিম খুঁজছিলো, তখন সেটির জন্য বানিয়েছিলাম ম্যাটেরিয়েল থিম, নিজের এবং অন্যদের ব্যাবহারের সুবিধার্থে। এখনো মাঝে মাঝে ইমেইল, প্রাইভেট মেসেজ আসে সেই থিমের জন্য, যদিও অনেক আগেই প্লেস্টোরের রিদমিকেই ম্যাটেরিয়াল ডিজাইন দেয়া হয়েছে।  

Indic Keyboard নামে একটা ওপেন সোর্স মাল্টিলিংগুয়াল কিবোর্ড আছে, বাংলা লিখা যায় এমন কিবোর্ড গুলোর মধ্যে বেশ ভাল এবং আধুনিক, ডাউনলোড সংখ্যা এক লাখের বেশী। সেটির লেয়াউটের একটি ছোট বাগের কারণে বাংলা লিখতে গেলে বেশ ভোগাতো। ছোট্ট একটা ছোট্ট বাগফিক্স এবং ফিচার এডের জন্য সেটির প্লেস্টোরের চেঞ্জলগে এখনো আমার নাম লিখা আছে। 

কিছুদিন আগে বানালাম বাংলা ভাষার প্রথম টেক্সট সামারাইজেশন ইঞ্জিন সংক্ষেপ। বাংলা যেকোন খবরের লিংক বা খবরটা কপি পেস্ট দিলেই সেটা সংক্ষেপ করে দেয়ার চেষ্টা করে সংক্ষেপ। শুরুতে খুব একটা সাড়া না পেলেও এখন প্রতিদিন আশি নব্বইজন করে ব্যাবহারকারী পাচ্ছি, আশা করি এলগরিদমটার উন্নতির সাথে সাথে সেটা আরও বাড়বে। 

জানি, এগুলো খুবই ক্ষুদ্র, নগণ্য এবং প্রায় অর্থহীন। এইগুলো লিখে সবাইকে জানানোটা হাস্যকর। 

কিন্তু তবুও লিখলাম, কারণ আমার এইসব করতেই ভাল লাগে, আর নিজের স্থান থেকে এভাবে যদি কিছু দিতে পারি, যত ক্ষুদ্রই হোক, ভাল লাগে। 

অনেকদিন ধরে শখ স্মার্টফোনের জন্য একটা বাংলা কিবোর্ড বানানোর যেটাতে ফোনেটিকেও “স্লাইড” করা যাবে। আলাদা আলাদা করে অক্ষর না লিখে অক্ষরগুলোর উপর একটানে আঙ্গুল বুলিয়ে গেলেই লেখা হবে। ফোনে দ্রুত লিখার প্রয়োজন আমার নিজেরও হয় এবং সেখান থেকেই এই ইচ্ছার উৎপত্তি, সাথে যদি অন্য কারও বাংলা লিখা সহজ হয়, দ্রুত হয়, তাই আমার লাভ। 

শুনতে খুব সহজ মনে হলেও এটা নিয়ে অল্প একটু পড়াশোনার পরেই টেকনিকাল জটিলতার পাহাড় দেখে ভয়ই পেয়েছি বলা যায়,  জানিনা পারবো কিনা, কিন্তু চেষ্টা করবো নিশ্চিত। এইসব করে নিজের মনে তৃপ্তি পাই, সেটাই আমার কাছে আসল, কারণ আমার মত ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠতে না পারা অলসদের কাছে এইসব অর্থহীন ছোট ছোট কাজ করাই অনেককিছু।